প্রিয় পাঠক, বিবিধ ব্লগ এ স্বাগত জানিয়ে শুরু করছি আজকের লেখাটি। আমরা জানবো মানতিক শব্দের অর্থ কি? মানতিক কাকে বলে বা ইলমুল মানতিক এর পরিচয় এবং মানতিক শাস্ত্রের জনক কে? বিস্তারিত। মনোযোগ দিয়ে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইল। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেই মানতিক কাকে বলে। আচ্ছা তার আগে ভাবুন তো যদি পৃথিবীটা এরকম হত যে এখানে কোন যুক্তি থাকবে না। যে যার মত যুক্তিহীন ভাবে চলা ফেরা করবে তাহলে কি ধরনের সমস্যা হতে পারত! এই সমস্যা সমাধান করার লক্ষেই ইলমুল মানতিক বা যুক্তি বিদ্যার উদ্ভব।
ইলমুল মানতিক কাকে বলে?
ইলমুল মানতিক এর শাব্দিক পরিচয়
ইলমুল মানতিক (علم المنطق) একটি যৌগিক শব্দ। আমরা শব্দটিকে বিশ্লেষণ করলে দুইটি শব্দ পাই একটি ইলম ও অন্যটি হল মানতিক। ইলম ও মানতিক দুটিই আরবি শব্দ।
ইলম শব্দের অর্থ – জ্ঞান, জানা, বুঝা, শাস্ত্র ইত্যাদি। ইলম সম্পর্কে বিস্তারিত আমাদের অন্য আরেকটি আর্টিকেল এ বলা হয়েছে। ইলম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন…
মানতিক একটি আরবি শব্দ। এর মুল অক্ষর নুন ( ن ) ত্ব ( ط ) কফ ( ق )। মানতিক শব্দের অর্থ – যুক্তি।
- বক্তৃতা,
- কালাম ( الكلام ),
- ألقيأس – অনুমান বা পরিমাপ করা,
- ألفقر – চিন্তা করা,
- ভাষা বা
- কথা ইত্যাদি। ব্যবহার এর ওপর শব্দের অর্থ নির্ধারিত হয়।
ইলমুল মানতিক শব্দের অর্থ হল – যুক্তিবিদ্যা।
ইলমুল মানতিক এর পারিভাষিক পরিচয়
সহজে বলা যায় – যে শাস্ত্র মস্তিষ্ককে চিন্তার ভুল থেকে রক্ষা করে তাকে, মানতিক বলে।
পরিভাষায় – দর্শনের যে শাখা চিন্তার ধারা ও সঠিক অনুমান পদ্ধতি অধ্যয়ন করে এবং চিন্তার ভুল থেকে মনকে বা মস্তিস্ক কে রক্ষা করে তাকে, ইলমুল মানতিক (علم المنطق) বলে।
ইলমুল মানতিক বা যুক্তি বিদ্যা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিজ্ঞান গুলোর একটি যা দীর্ঘকাল ব্যাপী বিদ্যমান রয়েছে। যুক্তির জ্ঞান না থাকলে এলোমেলোতা ও কুসঙ্কার প্রবল হবে, অজ্ঞতা ছড়িয়ে পড়বে। এজন্য ইলমুল মানতিক অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি জ্ঞান শাস্ত্র যা আমদেরকে চিন্তার ভুল থেকে রক্ষা করে, ভালো-খারাপ, ন্যায় – অন্যায় এর মাঝে পৃথক করার সামর্থ্য যোগায়।
মানতিক শাস্ত্রের জনক কে
মানতিক শাস্ত্রের জনক ও আবিষ্কারক ছিলেন – আরাস্তাতালিস। যাকে সংক্ষেপে আরাস্তু বলা হয়। যিনি ইতিহাসে এরিস্টটল নামে পরিচিত। এজন্যই, যুক্তিবিদ্যার জনক বলা হয় – এরিস্টটলকে।
মানতিক শাস্ত্রের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
মানতিকের প্রথম আবিষ্কারক বা জনক হলেন আরাস্তাতালিস। যাকে সংক্ষেপে আরাস্তু বলা হয়। যিনি হযরত ঈসা আ. এর জন্মের কিছুকাল পূর্বে জন্মগ্রহণ করেন। তিনিই সর্বপ্রথম ইস্কান্দার রুমির নির্দেশে মানতিক শাস্ত্রের কতিপয় নীতিমালা প্রণয়ন করেন এ কারণেই তাকে মানতিকের প্রথম জনক বলা হয়। ইতিহাসে তিনি অ্যারিস্টোটল নামে পরিচিত।
এরপর ইমাম ফারাবি আরাস্তুর লিখিত মানতিক নীতিমালা ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে মানতিক শাস্ত্রকে আরো সুন্দর আরো সুন্দরভাবে বিন্যস্ত করেন। এই জন্য তাকে মানতিক শাস্ত্রের দ্বিতীয় জনক বলা হয়। পরবর্তী সময়ে ইমাম ফারাবির মানতিক গুলো বিনষ্ট হয়ে যায়।
এরপর আলী ইবনে সিনা পুনরায় মানতিক শাস্ত্রকে বিস্তারিতভাবে লিখে প্রচার করেন। তাই মানতিক শাস্ত্রের তৃতীয় জনক বলা হয় ইবনে সিনা কে। আর আলী ইবনে সিনার মানতিকই পাঠ্য তালিকার অন্তর্ভুক্ত হয়ে চলে আসছে।
মানতিক বই
আলিম ক্লাসে মানতিক একটি পরীক্ষার বিষয় রয়েছে। যেটি দুরুসুল বালাগাত ও মানতিক। পরীক্ষার জন্য নিচের লিঙ্ক থেকে ৫% ছাড়ে বালাগাত ও মানতিক বইটি সংগ্রহ করতে পারেন।
তাইসিরুল মানতিক বাংলা বই pdf download
মানতিক বই ইন্টারনেট এ বিভিন্ন ওয়েবসাইটে শেয়ার করা হয়েছে। তারমধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় একটি বই হল – তাইসিরুল মানতিক বাংলা। বিবিধ ব্লগ এর ইউজারদের জন্য তাইসিরুল মানতিক বাংলা pdf download link প্রদান করা হল। এই লিঙ্ক ও ফাইল অন্য সাইটের। নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন।
বালাগাত ও মানতিক pdf
আলিম বালাগাত ও মানতিক pdf নোট বা গাইড ডাউনলোড করতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন। আরও বিভিন্ন তথ্য ও সেবা পেতে বিবিধ ব্লগ এর সাথেই থাকুন।
সারকথা
প্রিয় পাঠক, আজকের লেখা থেকে আমারা ইলমুল মানতিক কাকে বলে জানতে পারলাম। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অথবা উপকারে আসলে শেয়ার করুন ও কমেন্ট এ জানিয়ে দিন। মনোযোগ দিয়ে লেখাটি শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার যে কোন পরামর্শ অথবা জিঞ্জাসা থাকলে করতে পারেন আমাদের কমেন্ট বক্সে অথবা কন্টাক্ট পেজ অথবা কন্টাক্ট ইমেইলে ( bibidhblog@gamil.com )।